করোনাভাইরাস বিশ্বের ভ্রমণপিপাসুদের ঘরে রাখলেও দমাতে পারেনি ইতালির দম্পতি স্তেফানো ও সারা বারবারিসকে। করোনার মধ্যেই তারা বেরিয়েছেন সমুদ্র ভ্রমণে। সঙ্গে নিয়েছেন তিন সন্তানকেও। সে ভ্রমণের খরচ জোগাতে নিজেদের বাড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন তারা।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইতালির প্রশাসনিক অঞ্চল লোম্বার্দির একটি ছোট্ট শহরের বাসিন্দা স্টেফানো ও সারা। তাদের লক্ষ্য সপরিবারে আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে ক্যারিবীয় ও আরও কিছু অঞ্চল ভ্রমণ করা। বছরব্যাপী ভ্রমণের খরচ জোগাতে তারা বাড়ি বিক্রি করেন।
এ দম্পতির সঙ্গী তিন সন্তান। তারা হলো ১১ বছর বয়সী লেগো, আট বছর বয়সী নিনা ও তিন বছরের টিমো। পিপার নামে একটি কুকুরও আছে তাদের সঙ্গে।
‘শিবুমি’ নামের ১৭ মিটার দীর্ঘ একটি পালতোলা নৌকা এখন তাদের বাড়ি। শিবুমি জাপানি শব্দ, যার অর্থ পরিশোধিত সৌন্দর্য।
এ বিষয়ে সারা বারবেরিস সিএনএনকে বলেন, তারা শিশুদের এ কারণে নিয়ে এসেছেন যে, এ যাত্রা তাদের জীবনে স্মরণ রাখার মতো অভিজ্ঞতা ও শেখার সুযোগ দেবে। তিনি বলেন, করোনার এ সময়টি তাদের কাছে উপযুক্ত মনে হয়েছে।
সারা জানান, জুন মাসে তাদের যাত্রা শুরু করার কথা ছিল। করোনা শুরুর আগেই তারা বাড়িটি বিক্রি করেছেন, এতে পরের বছরের জন্য অপেক্ষা করতে হয়নি তাদের।
পরিবারটি ইতালির লিগুরিয়ার লা স্পিজিয়া থেকে স্পেনের বালিয়েরিক দ্বীপপুঞ্জের দিকে যাচ্ছে। তারপর জিব্রাল্টার প্রণালি হয়ে তারা আটলান্টিকের দিকে যাত্রা করবে।
পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে বছরের শেষ দিকে তারা ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জ, কেপ ভার্দে বন্দরে গিয়ে পৌঁছানোর আশা করছেন। আটলান্টিক মহাসাগর পেরিয়ে তারা সেন্ট লুসিয়া, গুয়াদেলৌপ ও মার্টিনিকে যেতে চান তারা।
সারা বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির অবনতি হলে তার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে তাদের।
স্টেফানো ও সারা দম্পতি মনে করছেন, এই ভ্রমণটি পিছিয়ে পরের বছর করলে তাদের বড় ছেলে কৈশোরে পদাপর্ণ করবে। সে সময়ে এসে ভ্রমণে তার উৎসাহ নাও থাকতে পারে।
যাত্রা শেষে কী হবে, তা নিয়ে চিন্তিত নন এ দম্পতি। জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে তারা ইতালিতে ফিরবেন। আপাতত বর্তমান মুহূর্তটিকে পুরোপুরি উপভোগ করতে চান তারা। ‘আমাদের আসল স্বপ্ন একদিন পলিনেশিয়ার সমস্ত পথে যাত্রা; সমুদ্রের কাছে আরও এক থেকে দুই বছর অবস্থান করা। আপাতত প্রথম পদক্ষেপ নিয়ে আসি; চলতি পথের প্রতি মুহূর্তের স্বাদ গ্রহণ করি’, বলেন সারা বারবারিস।
পাঠকের মতামত